শুরু হয়েছে ইসলাম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে পবিত্র মাস, রমজান। এই মাসে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা রোজা রাখে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখার সময় নিজেদের দিকে একটু বেশিই নজর দেওয়া উচিত। নাহলে সুগার লেভেল কমা-বাড়ার ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই রোজা রাখার আগে ডাক্তারের পরামর্শও নেওয়া উচিত।
এছাড়াও, ডায়াবেটিস রোগীরা কোন কোন বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখবেন দেখে নিন –
সুগার লেভেল হ্রাস বা বৃদ্ধি
রক্তে সুগার লেভেল কমার অনেক লক্ষণ রয়েছে, যেমন – অতিরিক্ত ঘাম, ঠান্ডা লাগা, খিদে পাওয়া, ঝাপসা দেখা, দ্রুত হার্টবিট এবং মাথা ঘোরা। আর সুগার লেভেল বৃদ্ধি হলে রোগীর ঠোঁট শুষ্ক ও ঘন ঘন প্রস্রাব পেতে থাকে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, সুগার রোগীদের রমজান মাসে প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। ডায়াবেটিস রোগীরা রমজান মাসে সব ধরণের খাবার খেতে পারে, তবে সুষম আহার করা উচিত।
ডায়াবেটিস রোগীরা সেহরি কীভাবে করবেন
ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সেহরি-তে এমন খাবার খান, যেগুলি একটু দেরিতে হজম হয়। সাধারণত সুগারের রোগীরা পরোটা খেতে পারেন না, তবে সেহরিতে কম তেল দিয়ে তৈরি পরোটা খেতে পারেন। দেরিতে হজম হয় এমন খাবারর মধ্যে হালিম-ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। হালিমে মাংস এবং ডাল থাকার কারণে ফাইবার প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, যার ফলস্বরূপ দীর্ঘক্ষণ খিদে পায় না। পেট ভর্তি থাকে। অতিরিক্ত তেল-মশলা-ভাজা জাতীয় খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন। সেহরিতে কাস্টার্ড বা কোনও ধরণের মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবেন না।
ডায়াবেটিস রোগীরা ইফতার করবেন কীভাবে
ডায়াবেটিস রোগীরা তাদের রোজা খেজুর দিয়ে খুলতে পারেন। গবেষণা অনুযায়ী, একটি খেজুরে ছয় গ্রাম কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। এছাড়াও, খেজুরে মিনারেলস, ফাইবার, ফসফরাস এবং পটাসিয়ামও রয়েছে। পটাসিয়াম ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। ইফতারের সময় ফলের চাট চিনি, ক্রিম এবং দুধ ছাড়াই খাওয়া যেতে পারে। সামান্য লেবুর রসও ফলের সাথে দেওয়া যেতে পারে। তেল, নুন, লাল লঙ্কাগুঁড়ো এবং চিনিযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া এড়ানো উচিত। রমজানের সময় আপনার ডায়েটে ফল, শাকসবজি, ডাল, দই ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করুন। ডিহাইড্রেশন দূর করতে, সুগার ফ্রি পানীয় বা যতটা সম্ভব বেশি পরিমাণে জল পান করুন।
ব্লাড প্রেসার ও সুগার চেক করুন
আপনি যদি সুগারের রোগী হন, তবে সময়মতো আপনার ব্লাড প্রেসার চেক করুন। ১৪-১৫ ঘণ্টা রোজার প্রভাব ব্লাড লেভেলের উপর পড়ে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তচাপ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। সময়মতো সুগার চেক করাও জরুরি। সুগার লেভেল বৃদ্ধি বা হ্রাস-এর পরিস্থিতি অনুযায়ী আপনার ডায়েটে এমন খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখবে।