করোনাকালে তুরস্কে জনপ্রিয় হচ্ছে ‘মোবাইল ঘর’

অবশ্যই পরুন

করোনাকালে গিজেম বাবুরহান নামে তুরস্কের এক নাগরিক চাকায় চালিত একটি ছোট বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়েছেন, যা তিনি একটি আঙুর বাগানে ভাড়া নিয়েছেন। যার মাঝে তিনি দেখতে পাচ্ছেন করোনাক্রান্ত তুরস্কের পর্যটনের ভবিষ্যৎও। বাবুরহান বলেন, জীবনমান ন্যূনতম পর্যায়ে থাকা অমূল্য শান্তি বয়ে আনা। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে আমরা এ রকম ছোট একটি বাড়ির মালিক হব এবং পিঠে একটি বাড়ি নিয়ে গোটা পৃথিবী ভ্রমণ করতে পারব।

ছোট বাড়ি বা মোবাইল হাউজের এই ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের ২০০৮ সালের বৈশ্বিক সংকটের পর ব্যাপক গতি লাভ করে। এই মহামারীতে তুরস্কে সেটি আবার নতুন করে পথ খুঁজে পেয়েছে। আলগা কাঠ ও যৌগিক ধাতু কাঠামো, যা ঘরের আকার নিয়ে চাকার সঙ্গে যুক্ত থাকে। তুরস্কে যারা এই বাড়িগুলো নির্মাণ করে, তারা বলছে, আগের বছরগুলোয় কদাচিৎই তারা চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পেরেছিল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি বদলে গেছে।

ওয়াইএকেও গ্রুপের প্রধান নির্বাহী গালিপ অলমেজ বলেছেন, ২০১৭ সালে এই ধারণা সামনে আনার পর আমি বিক্ষিপ্ত কিছু অর্ডার পেয়েছিলাম। যদি আমি ২০২০ সালের সঙ্গে আগের অর্ডারগুলোর তুলনা করি, তবে দেখব এ সময়ে এসে চাহিদা ২০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও কী পরিমাণ বিক্রি হয়েছে, সেটি নির্দিষ্টভাবে তিনি উল্লেখ করেননি।

স্থপতি পেলিন ডাস্টেগোর বলেন, কাসা লোকোমোটিফ কোম্পানির জন্য তার ডিজাইন করা বেশির ভাগ ছোট ঘর ছিল পর্যটন শিল্পে ব্যবহারের জন্য। যারা মূলত ক্যাম্পিংয়ের ধারণা মাথায় রেখে এগুলো অর্ডার করছেন। এএফপিকে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে আমাদের অর্ডার ছিল ২৫০-এর নিচে এবং ২০২০ সালের এক মাসে এটি ৪ হাজার ৫০০ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল।

বিশ্বে যেসব দেশ ভ্রমণের জন্য অধিক পরিচিত, তুর্কি তার অন্যতম। যেখানে গোল্ডেন বিচকে কেন্দ্র করে বিলাসবহুল হোটেলগুলো গড়ে উঠেছে। কিন্তু মহামারীতে অন্যান্য দেশের পর্যটন খাতের মতো তুরস্কের পর্যটন খাতও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি ধারণা করা হচ্ছে আগামী কয়েক বছর মানুষ ভিড় থেকে দূরে সরে থাকতে বেশি স্বস্তি বোধ করবে, যে কারণে এখন তুরস্কের পর্যটন খাত নতুন করে নিজেদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে শুরু করেছে।

ডাস্টেগোরের মতে, পর্যটন খাতে ছোট ঘরের ধারণা জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে যুক্ত রয়েছে কম বিনিয়োগের ধারণা। যা কিনা সাড়ে তিন বছরের মধ্যে লাভের দিকে মুখ ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম। বড় এবং বিলাসবহুল হোটেলে অর্থ বিনিয়োগের চেয়ে ছোট এই মোবাইল ঘরগুলোয় বিনিয়োগ করা এবং সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করা অধিকতর সহজ।

তাছাড়া কোনো ধরনের বিল্ডিং পারমিট বা অনুমতি ছাড়াই বাড়িগুলো পার্ক করিয়ে রাখা সম্ভব। কারণ তুরস্কে সেগুলোর গাড়ির মর্যাদা রয়েছে। এমনকি ৩০ কিংবা ৪০ বছর বয়সী মানুষেরাও এসব বাড়ি কেনার প্রতি আগ্রহী। মূলত বাইরে বাড়ি ভাড়া করে অধিক অর্থ ব্যয়ের চেয়ে এই ঘরগুলো একবার কিনে ফেলে প্রচুর অর্থ বাঁচানো সম্ভব।

ডাস্টেগোর বলেন, আমি আরো অনেক বেশি ক্যাম্পিং স্টেশন এবং ছোট ঘরের রিসোর্ট ভবিষ্যতের দিনগুলোয় দেখতে পাব বলে আশা করছি।

গাগলার গোকগুন তার কেনা ছোট বাড়িটি এরই মধ্যে ভাড়া দিয়েছেন, যেটি তিনি এজিয়ান সাগরের কাছে একটি আঙ্গুর বাগানের ধারে পার্ক করেছেন। তিনি বলেন, মানুষ ৫০০ লোকের সঙ্গে হোটেলে থাকার চেয়ে সামনের দিনগুলোয় ছোট দল নিয়ে প্রকৃতির মাঝে অবস্থান করতে ভালোবাসবে।

এএফপি অবলম্বনে

সর্বশেষ সংবাদ

তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্ক রাষ্ট্রদূত রামিস সেনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্ব একটি প্রতিনিধি দল। রোববার...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ