পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনের রাজধানী পেশোয়ারে হিন্দুদের একটি মন্দির রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় স্থানীয় এক পুলিশ প্রধানসহ ১২পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করেছে পাকিস্তান। গতমাসে সেখানে মুসলিম ধর্মীয় সংগঠনের সমর্থকরা ওই মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ভাঙচুর করে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে থামানোর চেষ্টা না করা, কুপুরুষোচিত আচরণ, দায়িত্বহীনতা এবং কর্তব্যে অবহেলা এবং ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ওই পুলিশ সদস্যদের বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানে প্রাদেশিক পুলিশ প্রধান আব্বাসী বলেন, উত্তরপশ্চিম খাইবার পাখতুনের আঞ্চলিক সরকার শাস্তিস্বরুপ অন্য ৩৩ কর্মকর্তাকে এক বছরের জন্য বরখাস্ত করেছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর উন্মত্ত জনতা খাইবার পাখতুনের রাজধানী দক্ষিণ পেশোয়ার থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরের করক জেলায় শ্রী-পরমেশ্বর-জি নামে ওই মন্দির ভাঙচুর ও তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রায় দুই হাজার মানুষ ওই ভাঙচুরে অংশ নেয়।
পাকিস্তান সরকার ১৯২০ সালে নির্মিত ঐতিহাসিক মন্দিরটিতে হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিল।
মন্দিরের পাশে একটি ভবন পূণ্যার্থীদের পরিদর্শনের জন্য সংস্কারের উদ্যোগ নেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উন্মত্ত জনতা ওই তাণ্ডবলীলা চালায়। হিন্দু নেতারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ওই মন্দির সংস্কারের অনুমতি নিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও স্থানীয় এক ধর্মীয় নেতার নেতৃত্বে উচ্ছৃঙ্খল জনতা ভবন কমপাউন্ডে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তাণ্ডবের পর ভিডিও দেখে শনাক্ত করে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতাসহ অন্তত ৩০জন দাঙ্গাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ওই ভবনকে পুনর্নির্মাণের আদেশ দেন। আগামী ১৯ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য রয়েছে।
সরকারি তথ্যানুসারে পাকিস্তানে প্রায় ৩৫ লাখ হিন্দু বসবাস করে। পাকিস্তানের ২০ কোটি জনগণের যা ১.৫ শতাংশ।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে হিন্দু-মুসলিম শান্তিপূর্ণ বসবাস করলেও ধর্মীয় অবমাননা ব্লাসফেমি আইন নিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা সংগঠিত করা হয়।
পাকিস্তানে হিন্দুমন্দিরে আক্রমণ স্বাভাবিক ঘটনা না হলেও সাম্প্রাতিক সময়ে এই ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।