পাল্লেকেলে টেস্টের শেষ দিন যেভাবে ভাগাভাগি হলো, আগের চার দিনেও ঠিক তাই হয়েছে। বাংলাদেশ দুইদিন এবং শ্রীলঙ্কা দুই দিন; নিজেদের প্রথম ইনিংস শেষ করতে দুই দিন করে সময় নিয়েছে দল দুটি। সঙ্গে শেষ দিনের মতো আরও একদিন ছিল বৃষ্টির হানা, আলো স্বল্পতার কারণেও গচ্ছা গেছে অনেকটা সময়।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্টের ফল অনুমেয়ই হয়ে উঠেছিল। রোববার শেষ দিনে বাংলাদেশের দ্রুত দুটি উইকেট পতন ও বৃষ্টির হানা ছাড়া সবকিছু প্রত্যাশিতভাবেই হয়েছে। রান বন্যার পাল্লেকেলে টেস্ট ড্র হয়েছে। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচটি এই পাল্লেকেলেতেই আগামী ২৯ এপ্রিল শুরু হবে।
পাল্লেকেলে টেস্ট ড্র করে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো পয়েন্ট পেলো বাংলাদেশ। তালিকার সর্বশেষ দল বাংলাদেশ এই ড্র থেকে ২০ পয়েন্ট পেয়েছে। সমান পয়েন্ট পাওয়া শ্রীলঙ্কা ঠিক বাংলাদেশের উপরে। লঙ্কানদের ঝুলিতে ১৪০ পয়েন্ট।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করে রান পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হকের সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে ৫৪১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। জবাবে অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নের ডাবল সেঞ্চুরি ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে টপকে যায় শ্রীলঙ্কা। ৮ উইকেটে ৬৪৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন স্বাগতিকরা।
১০৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের মতো এই ইনিংসেও ভালো শুরু হয়নি মুমিনুল হকের দলের। দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হন সাইফ হাসান। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে ফেরা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান এবার ১ রান করে থামেন।
সাইফের বিদায় অতেটা ধাক্কার ছিল না, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ২৭ রানে দুই উইকেট হারানো দলকে আলোর পথে ফেরান তামিম ও মুমিনুল। এ দুজন গড়ে তোলেন ৭৩ রানের জুটি।
৩৩ ওভারে স্কোরকার্ডে ১০২ রান যোগ করে দ্বিতীয় সেশন শেষ করেন তামিম-মুমিনুল। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানে আউট হওয়া তামিম ৯৮ বলে ১০টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন। মুমিনুল অপরাজিত থাকেন ২৩ রানে। এরপর শুরু হয় বৃষ্টি, দ্বিতীয় সেশনের পর আর খেলা গড়ায়নি। ম্যাচ ড্র ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।
এরআগে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের গোড়াটা মজবুত করে দেন তামিম ইকবাল। দ্বিতীয় ওভারে সাইফ হাসান আউট হওয়ার পর দ্রুত রান তুলে চাপ কাটিয়ে তোলেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার। এই সময়ের মধ্যে উইকেটে মানিয়ে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তামিম-শান্ত জুটি থেকে ১৪৪ রান পায় বাংলাদেশ। দারুণ সব শটে ইনিংস বড় করেও তামিম ইকবাল পারেননি সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে। বাঁহাতি এই ওপেনার ১০১ বলে ১৫টি চারে ৯০ রান করে আউট হন।
তামিম না পারলেও টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৩৭৮ বলে ১৭টি চার ও একটি ছক্কায় ১৬৩ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। বিদেশের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া মুমিনুল ৩০৪ বলে ১১টি চারে ১২৭ রান করেন।
শান্ত-মুমিনুল জুটি থেকে ২৪২ রান পায় বাংলাদেশ। যা তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। এরপর মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ৬৮ ও লিটন ৫০ রান করে বাংলাদেশের ইনিংস বড় করেন। লঙ্কান বাঁহাতি পেসার বিশ্ব ফার্নান্দো সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন। সুরঙ্গ লাকমল, লাহিরু কুমারা ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা একটি করে উইকেট নেন।