মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে বেশ কিছুদিন ধরে নজরদারিতে থাকার পর হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামুনুলকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ২টার দিকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ। জানালেন কোন পরিপ্রেক্ষিতে হেফাজত নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলো।
হারুন অর রশীদ বলেন, তার বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, রেজিস্ট্রার অফিসে হামলা ভাঙচুরসহ অনেকগুলো মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছিল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রেখেছিলাম, পাশাপাশি এসব মামলার তদন্ত করছিলাম। তদন্তে তার সুস্পষ্ট সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি হারুন বলেন, গ্রেপ্তার পর আজ তাকে মোহাম্মদপুর থানায় রাখা হবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামীকাল তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তার রিমান্ড চাওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের তাণ্ডবের বিষয়ে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না?- এমন প্রশ্নে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সেদিনের ঘটনা আপনারা সবাই দেখেছেন।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে মামুনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত এক মাস ধরে ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে হেফাজতের আন্দোলনসহ নানা বিষয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন মাওলানা মামুনুল হক।
নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সহিংসতায় দেশে ১৭ জনের মৃত্যুর হয়। এসব সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। এসব ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা হিসেবে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের দিকেই সন্দেহের তীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ২ হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দফতর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলাটি করেন।