বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৪ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
অন্যদিকে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের বিষয়ে বলেছেন, অনেকদিন হয়ে গেছে আপনারা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারছেন না। প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। এরপর আর কোনো সময় বাড়ানো হবে না।
সংশোধনের মাধ্যমে প্রকল্পটির ব্যয় ১৯৫ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বিএসএমএমইউ। এতে মোট ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৫৬১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ প্রকল্পে ইডিসিএফ ও কোরিয়া ১ হাজার ৪৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে এবং বিএসএমএমইউয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।
একনেকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারি সব কোম্পানিগুলোকে নিজস্ব সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। দীর্ঘদিন কোনো সরকারি কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম তৈরিতে সবধরনের মানুষকে সুযোগ দিতে হবে বলে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, সেচ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সবাইকে সাবধান হতে হব। যেসব খাল খননের মাধ্যমে পানি ধরে রাখা হবে, সেসব খালের গভীরতা যেন ঠিক থাকে। নামমাত্র খনন করে যেন প্রকল্প শেষ করা না হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, খাল খনন নামের প্রকল্পতে যা হয় সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর জানেন। এজন্যই তিনি কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৯০১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল হবে একটি রোগীবান্ধব সবুজ হাসপাতাল। হসপিটাল ইনফরমেশন সেন্টার চালুর মাধ্যমে রোগী ও হাসপাতাল পরিচালনা হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে।
বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাসহ জনসাধারণ এখানে সাশ্রয়ীমূল্যে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসাসেবা পাবেন। এ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি স্বাস্থ্য সেবার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। বিশেষ করে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি উন্নত গবেষণা ও প্রশিক্ষণের দিগন্ত প্রসারিত হবে। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটির মাধ্যমে ‘বিদেশ নয়, দেশেই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা’ দেওয়া সম্ভব হবে।