ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। আগের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বাধিক আক্রান্তের নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে দেশটিতে। করোনাভাইরাসের এই ঢেউয়ে আক্রান্তদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে বলে দিল্লির চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, প্রথম ঢেউয়ের সময় এত বেশি সংখ্যক শিশু আক্রান্ত হতে দেখা যায়নি। চিকিৎসকরা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, আক্রান্তদের বয়স পাঁচেরও কম। এমনকি এক মাসের শিশুও আক্রান্ত হচ্ছে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ রোগে।
স্যর গঙ্গারাম হাসপাতালের চিকিৎসক ধীরেন গুপ্ত জানিয়েছেন, ‘করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে, এমন শিশুর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় পাঁচগুণ বেড়েছে। করোনা ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত একটি তিন মাসের শিশু ওই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি রয়েছে। শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এক থেকে পাঁচ বছরের শিশুরা।
শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ভারতে এক দিনে আক্রান্ত হয়েছে দুই লাখ ১৭ হাজারেরও বেশি। এ সময় মৃত্যু হয়েছে ১১ শ’ ৮৫ জনের। এর মধ্যে দিল্লিতে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৬৯৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ১১২ জনের। রাজ্যটিতে বর্তমানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৩০৯ জন। বিভিন্ন হাসপাতালে খালি শয্যার সংখ্যা দ্রুতই কমে আসছে। সংক্রমণের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫.৯২ ভাগ।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুদের শরীরে যে করোনার উপসর্গগুলো দেখা যাচ্ছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য জ্বর, বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা। দিল্লিতে বসন্তকুঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক রাহুল নাগপাল জানিয়েছেন, ‘সব বয়সের শিশুরাই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের হাসপাতালে ছয় সপ্তাহের একটি শিশু ভর্তি রয়েছে, যে করোনায় আক্রান্ত। তিনিও জানান, গত বছর শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাটি ছিল নগণ্য। এবার তা অনেকটা বেড়ে গেছে। আক্রান্ত পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্যটিও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে।
জানা গেছে, জানুয়ারি মাসের ১৫ থেকে ২৩ তারিখের মধ্যে দিল্লিতে একটি জরিপ চালানো হয়েছিল ১২ বছরের কম বয়সের শিশুদের ওপরে। এতে দেখা গেছে, মোট পরীক্ষার ৫২ শতাংশের বেশি শিশুর শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি রয়েছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা