ব্রাজিলের নতুন স্ট্রেন ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় দক্ষিণ আমেরিকা ও পর্তুগাল থেকে বৃটেন ভ্রমণ নিষিদ্ধ হয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে এটি কার্যকর হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মন্ত্রীর সাথে কোভিড-ও কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভাইরাস সম্পর্কিত নতুন ও উদীয়মান শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস হুমকি পরামর্শদাতা গ্রুপের (Nervtag) বিশেষজ্ঞদের প্রমাণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তটি গৃহিত হয়।
ক্ষুব্ধ এমপিরা ব্রাজিলের নতুন কোভিড সুপার স্ট্রেন সম্পর্কে সতর্কতার চার দিন পর গতকাল সন্ধ্যায় দক্ষিণ আমেরিকা এবং পর্তুগালের সাথে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার জন্য মন্ত্রী পরিষদ বৈঠক করেছে। সরকার ঘোষণা করেছে, ব্রাজিলিয়ান কোভিড রোধ করার লক্ষ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে দক্ষিণ আমেরিকা এবং পর্তুগাল থেকে আগত যাত্রীদের আজ শুক্রবার সকাল থেকে বৃটেনে আসা নিষিদ্ধ করা হবে।
ট্রান্সপোর্ট সেক্রেটারি গ্রান্ট শ্যাপস বলেছেন, আর্জেন্টিনা, ভেনিজুয়েলা, বলিভিয়া এবং পেরু সহ এক ডজনেরও বেশি দেশ থেকে আগতদের থামানো হবে। তিনি বলেছেন, ব্রাজিলের সাথে ঘনিষ্ঠ ভ্রমণ সংযোগের কারণে পর্তুগালকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
পূর্ববর্তী ১০ দিনের মধ্যে তালিকাভুক্ত কোনও দেশে থাকা কাউকেই প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। তবে বৃটেনের বাসিন্দাদের নতুন নিয়ম থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে। কিন্তু তাদেরকে আগমনের সময় থেকে ১০ দিনের আইসোলেশন তথা স্ব-বিচ্ছিন্ন হতে হবে।
সরকারী সূত্র মতে, গ্রান্ট শ্যাপসের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে ওয়েলস এবং স্কটল্যান্ড একই ধরণের পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করেছেন, এটি অত্যন্ত সংক্রামক স্ট্রেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা অঞ্চলের মতো ভয়ংকর, যা গত বছরের শেষের দিকে উদ্ভূত হয়েছিল।
সাংসদরা বুধবার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন না করায় প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন।
বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তখন স্বীকার করেছেন, তিনি ব্রাজিলের নতুন কোভিড স্ট্রেন সম্পর্কে ‘উদ্বিগ্ন’। তবে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন না করায় বিরোধী লেবার পার্টির এমপি স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান য়োভেট্ট কুপার বুধবার মিঃ জনসনকে জানতে চেয়েছেন, নতুন স্ট্রেনের সতর্কতার জন্য যুক্তরাজ্যের সীমানা কেন ব্রাজিল ভ্রমণকারীদের জন্য বন্ধ করা হয়নি।
জনসন তাকে বলেছেন, ব্রাজিল থেকে আগত লোকদের চেক করা উচিত তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা অতিরিক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রকৃতপক্ষে ব্রাজিল থেকে আসা লোকজনকে থামানো হচ্ছে।
এরপরও সীমান্তে মহামারী নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্রুত পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য সরকার সমালোচিত হয়েছে। লিব ডেম এমপি ও দলীয় পরিবহণের মুখপাত্র সারা অলনি বলেছেন, আবারও মনে হচ্ছে সরকার কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে দক্ষিণ আমেরিকার ভ্রমণ বিষয়ে পদক্ষেপে বিলম্ব করেছে। নতুন ভাইরাস আগমনের ঝুঁকি নিয়েছে।
দক্ষিণ আমেরিকা ও পর্তুগাল থেকে বৃটেন ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা ছাড়াও আজ থেকে বৃটেনে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের প্রবেশের আগে কোভিড -১৯ পরীক্ষার নেতিবাচক ফল দেখাতে হবে। বর্ডার ফোর্সের প্রহরীরা স্পট চেক করবেন এবং যে কোনও বিধি লঙ্ঘন করলে ৫০০ পাউন্ড জরিমানা করা হবে। দেশে ফেরা বৃটিশ যাত্রী সহ সকলকে ভ্রমণের আগে ৭২ ঘন্টার মধ্যে তাদের এই পরীক্ষা দিতে হবে।