শীতের মৌসুমে বাজারে আসে বিভিন্ন প্রকারের সবজি। শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত ফুলকপি খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। ফুলকপি দিয়ে তৈরি হয় নানা স্বাদের খাবার। যেভাবেই রান্না হোক না কেন, সবজিটি খেতে বেশ দারুণ। ফুলকপি দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও অত্যন্ত সুস্বাদু। একইসঙ্গে এর পুষ্টিকরগুণও বেশ ভালো। ফুলকপি খেলে আপনি পাবেন অনেকগুলো উপকার।
চলুন জেনে নেওয়া যাক এই সবজির কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-
১. ফাইবার বেশি থাকে
ফাইবার যেকোনো খাদ্যের একটি প্রয়োজনীয় অংশ, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। ফুলকপি ফাইবারে সমৃদ্ধ একটি খাবার। মাত্র এক কাপ ফুলকপি দিয়ে আপনার দৈনিক ফাইবারের চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব। এ ছাড়া ফুলকপি ভিটামিন সি, ফোলেট এবং ভিটামিন কে সহ ভিটামিন এবং খনিজগুলোর ভালো উৎস। পাশাপাশি সবজিটি হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। নিয়মিত ফুলকপি খেলে তা হজম শক্তি এবং কার্ডিয়াক স্বাস্থ্যকেও ভালো রাখতে পারে।
২. এন্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস
ফুলকপি অধিক পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে, যা মানব দেহের টিস্যুর স্বতঃস্ফুর্ত প্রতিক্রিয়ার কমাতে এবং বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত উপকারী। অন্যান্য ক্রুসিফেরাস সবজির মতো, ফুলকপিতে বিশেষ করে গ্লুকোসিনোলেটস এবং আইসোথিওসায়ানেটস বেশি থাকে, এন্টিঅক্সিডেন্টের দুটি গ্রুপ যা ক্যানসার কোষের বৃদ্ধিকে কমিয়ে দেয়। ফুলকপিতে রয়েছে, ক্যারোটিনয়েড এবং ফ্ল্যাভোনয়েড এন্টিঅক্সিডেন্টও যেগুলির ক্যানসার রোধে সহায়তা করে।
৩. ওজন কমাতে ফুলকপি
ফুলকপিতে ক্যালোরি কম থাকলেও ফাইবার এবং পানি বেশি থাকে, যা মানুষের ওজন কমাতে করতে পারে। এক কাপ (১০৭ গ্রাম) ফুলকপিতে মাত্র ২৭ ক্যালোরি থাকে। ফলে অনেক ফুলকপি খেলেও ক্যালোরি খুব একটা বাড়ে না। এটি চাল এবং আটার মতো উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের বিকল্প হিসেবেও খেতে পারেন। কেউ ওজন কমাতে চাইলে তার জন্য সবজিটি দারুণ সহায়ক হতে পারে। সবজিটি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় তা মানুষের হজমকে ধীর করে দিতে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখতে পারে।
অন্যদিকে ফুলকপিতে আছে পর্যাপ্ত পানির উপাদান। প্রায় ৯২ শতাংশ পানি দিয়ে তৈরি হওয়ায় ফুলকপি খাওয়ার অভ্যাস আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ফুলকপি খেলে তা ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতে পারে।
৪. কোলিনের উৎস
কোলিন হলো এক ধরনের পুষ্টি যা স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা এবং বিপাকের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। পর্যাপ্ত কোলিন গ্রহণ না করলে তা স্মৃতিশক্তির কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। এক কাপ ফুলকপিতে আপনার প্রতিদিনের চাহিদার প্রায় ১১ শতাংশ কোলিন পাওয়া যায়। তাই ফুলকপি খেলে, তা আপনার স্মৃতিশক্তির কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেবে।