করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞায় দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে দেশব্যাপী বাড়তি ভাড়ার মহোৎসব চলছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের সদিচ্ছা থেকে গণপরিবহনে নিষেধাজ্ঞা থাকলে সব ধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ করতে হবে। দুরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ করে আন্তঃজেলা পরিবহন চালু করায় যাত্রী সাধারণ একইসঙ্গে অসংখ্য মানুষের সংস্পর্শে আসায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে ঝুঁকি আরও বাড়ছে বলে মনে করে যাত্রী অধিকার আন্দোলন।
এমতাবস্থায় গণপরিবহনসহ আন্তঃজেলা বাস সার্ভিসসহ জরুরি সেবা ছাড়া সকল প্রকার যানবাহন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করুন। আর তা সম্ভব না হলে দূরপাল্লার গণপরিবহন খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে যাত্রী অধিকার আন্দোলন।
সোমবার (১০ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল ও যুগ্ম আহ্বায়ক অন্তু মুজাহিদ এ দাবি জানান। চলমান পরিস্থিতিতে সংক্রমণের ঝুঁকি যেমন বাড়ছে তেমনি প্রাইভেট সার্ভিসের নামে ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করেছে দুরপাল্লার বিভিন্ন ধরনের পরিবহন সেবায়। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে যাত্রী হয়রানি বন্ধ করতে সরকারকে দ্রুত উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তারা।
বিবৃতিতে যাত্রী অধিকার আন্দোলনের দুই নেতা বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার নিষেধাজ্ঞা দিলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পরিবহন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোর অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তা এখন কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। সরকার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দূরপাল্লার বাস বন্ধ করলেও প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এমনকি এম্বুলেন্সও এখন গণপরিবহনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এতে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে ক্ষেত্রবিশেষে ৫ থেকে দশগুণ বেশি ভাড়া। অথচ সারাবছর কষ্ট করে মানুষকে সেবা দিয়ে যাওয়া পরিবহন শ্রমিকরা আজ কর্মহীন হয়ে বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
তারা বলেন, নিষেধাজ্ঞা সবার জন্যই সমান হবার কথা। অথচ বড় লোকের বাহন প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকছে আর গরিবের বাহন বাস বন্ধ থাকবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা এক ধরনের প্রহসন।
গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, এগুলো সবই চলছে প্রশাসনের সঙ্গে অর্থনৈতিক আঁতাতের মাধ্যমে। আমরা বলবো, করোনা নিয়ন্ত্রণের সদিচ্ছা থাকলে সব পরিবহন বন্ধ করে দিন, নয়লে সব খুলে দিন।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন, দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও অন্য গাড়ি চলায় মানুষ ভেঙে ভেঙে হলেও বাড়ি যাচ্ছে। এতে বেশি মানুষের সংস্পর্শে আসায় করোনা ছড়ানোর ঝুঁকি আরও বাড়ছে। ফেরিঘাটে যে চিত্র দেখা যাচ্ছে তাতে ঝুঁকি কি হারে বাড়ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই দ্রুত যাত্রীদের জন্য কল্যাণমুখী একটি সিদ্ধান্ত নিন।
দূরপাল্লার গণপরিবহন খুলে দেয়ার পাশাপাশি প্রতিটি গাড়িতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করার পরামর্শ দেন তারা। প্রতিটি মহাসড়কে স্বাস্থ্যবিধি মনিটরিংয়ে মোবাইলকোর্ট বসিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করা, এক ঈদে গড়ে সবাইকে ছুটি না দিয়ে দুই ঈদে ভাগ করে ছুটি দিয়ে সড়কে চাপ কমানোরও পরামর্শ দেয়া হয় যাত্রী অধিকার আন্দোলনের পক্ষ থেকে।