তওবা অর্থ গোনাহ থেকে আনুগত্যের দিকে এবং গাফলত থেকে আল্লাহর স্মরণের দিকে ফিরে আসা। আর এস্তেগফার অর্থ ক্ষমা চাওয়া। প্রত্যেক বান্দার উপর তার পাপ থেকে তওবা-এস্তেগফার করা ওয়াজিব। মহান রাব্বুল আলামীন তওবাকে পছন্দ করেন। তিনি চান, তাঁর বান্দারা বেশি বেশি করে তওয়া করুক। তিনি তো ক্ষমা করার জন্য উদার।
তওবা একটি অনিবার্য ইবাদত। তওবার বরকতে সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। যে কোন মানুষ যখন নিজের জীবন সম্পর্কে চিন্তা করবে সে লক্ষ্য করবে সব সময়ই কোন না কোন পাপ সে করছে। তাই তওবা করা সর্বদাই জরুরি।
রমজান একেবারেই শেষ দিকে চলে এসেছে। আর মাত্র দুই/তিনটি রোজা আছে। আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার মতো মোক্ষম সময় কিন্তু রমজান। যে সময়টুকু আছে এই সময়ের মধ্যে বেশি বেশি করে আল্লাহর কাছে তওবা-এস্তেগফার করে নেওয়া প্রতিটি মুসলিম বান্দার জন্য জরুরি। কিভাবে করবেন এই তওবা। এবার জেনে নিন…
* খাঁটি অন্তরে তওবা করতে হবে। অর্থাৎ শুধু আল্লাহর আযাবের ভয় ও তাঁর নির্দেশের মহত্বকে সামনে রেখে তওবা করতে হবে।
* অতীত পাপের প্রতি অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে।
* উক্ত পাপ থেকে এখনই বিরত হতে হবে।
* আল্লাহর হক নষ্ট করে থাকলে তা সংশোধন ও প্রতিকার করতে হবে। যেমন- নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি আল্লাহর হক আদায় না করে থাকলে তা আদায় করতে হবে।
* আর বান্দার হকের মধ্যে অর্থ সম্পদ বিষয়ক হক নষ্ট করে থাকলে উক্ত অর্থ হকদারের নিকট বা তার মৃত্যু হয়ে থাকলে তার উত্তরাধিকারীর নিকট ফেরত দিতে হবে। আর সম্ভব না হলে তাদের থেকে মাফ করিয়ে নিতে হবে। আর অর্থ সম্পদ ব্যতীত অন্য কোন হক নষ্ট করে থাকলে, যেমন গীবত বা গালি-গালাজ করে থাকলে, মুখে কিংবা কথায় কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার থেকে মাফ করিয়ে নিতে হবে।
* অন্তরে আশা রাখতে হবে, যে আমি গুনাহগার কিন্তু আল্লাহ গাফুরুর রাহীম – অতীব ক্ষমাশীল ও দয়ালু। সুতরাং তিনি আমার তওবা কবুল করবেন।
* তওবা করার পরে প্রাণপণে চেষ্টা করতে হবে পাপ কাজ থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকতে এবং সাধ্য অনুযায়ী বেশি বেশি করে নেকীর কাজ করার চেষ্টা করতে হবে।
তওবা কবুলের জন্য তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে
* একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যেই তওবা করতে হবে।
* কৃত গোনাহের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে।
* পুনরায় সে গোনাহে জড়িত না হওয়ার প্রতিজ্ঞা করতে হবে।
তওবার জন্য বেশি বেশি পাঠ করতে হবে
‘আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ুম ওয়া আতূবু ইলাইহে’। অর্থ: আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। আমি অনুতপ্ত হৃদয়ে তাঁর দিকে ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি। (তিরমিযী, আবু দাঊদ, মিশকাত হাদীস-২৩৫৩)