ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে নিজেকে ও তার আত্মীয়স্বজনসহ হোয়াইট হাউসের কয়েকজন একান্ত অনুগতজনকে ক্ষমা করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভবিষ্যৎ বিপদ আঁচ করতে পেরে তিনি এ কাজ করতে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউস আধিকারিক এবং আইনজীবীদের সঙ্গে শলাপরামর্শও করছেন তিনি। হোয়াইট হাউসের কয়েকটি ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে এই সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
বিশ্বের অনেক দেশের মতো আমেরিকার সংবিধানে প্রেসিডেন্টের হাতে বিশেষ ক্ষমা মঞ্জুরের অধিকার দেওয়া রয়েছে। তাতে সাধারণ নাগরিক থেকে আমলা, পরিবার অথবা বন্ধু-বান্ধব জাতীয় অপরাধ আইনের আওতায় যে কাউকে ক্ষমা করে দিতে পারেন তিনি। হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেওয়ার আগে সেই ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই ট্রাম্প নিজের ভবিষ্যৎ মসৃণ করতে চাইছেন বলে জানা গেছে।
হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেওয়ার আগে ক্ষমা মঞ্জুরের রেওয়াজ দীর্ঘদিন ধরেই পালন করে আসছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্টরা। একসময় রিচার্ড নিক্সনকে সব অপরাধ থেকে মুক্ত করেছিলেন জেরাল্ড ফোর্ড। ভিয়েতনাম যুদ্ধে যাওয়া বাধ্যতামূলক হলেও, সে দেশের বহু নাগরিকই সরকারি নির্দেশ পালন করেননি। জিমা কার্টার তাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া নিজের ভাই রজার ক্লিন্টনকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন বিল ক্লিন্টনও। কোনো প্রেসিডেন্টকে যদি ইমপিচ করা হয়, বিদায়কালে তিনি যদিও এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন না। তবে হোয়াইট হাউসে এখন দুই সপ্তাহেরও কম মেয়াদ বাকি ট্রাম্পের। এত কম সময়ে তাকে ইমপিচ করা এক প্রকার অসম্ভব।
প্রেসিডেন্টের ক্ষ্মতা গ্রহণের পর থেকে এখন পর্যন্ত বহুবার বিতর্কে জড়িয়েছেন ট্রাম্প। যৌন নিগ্রহ, ধর্ষণ, কর ফাঁকি, রুশ-সংযোগ, ভুয়া খবর ছড়ানোসহ একের পর এক অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তাতে নয়া সংযোজন বৃহস্পতিবারের ঘটনা, যেখানে জনগণের রায় অস্বীকার করে, উন্মত্ত জনতাকে ক্যাপিটলে ঢুকে তাণ্ডব চালানোয় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। যে কারণে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার দুই সপ্তাহ আগেই তাকে কীভাবে অপসারণ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে কংগ্রেসে। শোনা যাচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমা মঞ্জুরের অধিকার প্রয়োগ করে ছেলেমেয়ে এবং নিজের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ট্রাম্প।