spot_img

২০ দিনে এলো এক মাসের বেশি রেমিট্যান্স

অবশ্যই পরুন

 বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনার প্রকোপের মধ্যেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানো অব্যাহত রেখেছে। চলতি মে মাসের প্রথম ২০ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে, তা গত বছরের একই সয়ময়ের পুরো মে মাসের অঙ্ককে ছাড়িয়ে গেছে।

বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালীন প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে প্রবাসীরা চলতি মে মাসের প্রথম ২০ দিনে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ১৫৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। গত বছর মে পুরো মাসে (৩১ দিনে) রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। সেই হিসাবে ২০ দিনেই পুরো মাসের চেয়ে ৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। প্রবাসী আয়ের এ গতি অব্যাহত থাকলে চলতি মে মাস শেষে রেমিট্যান্স আহরণ ২৪০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

গেলো মাস এপ্রিলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০৬ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার (২.০৬ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ১৭ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ বেশি। গত বছর এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি ডলার।

এর আগে, করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে গত বছরের জুলাই‌ মাসে রেকর্ড রে‌মিট্যান্স পায় বাংলাদেশ। ওই মাসে প্রবাসীরা প্রায় ২৬০ কোটি ডলার রে‌মিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। এর আগে, কোনো একক মাসে এত রে‌মিট্যান্স আসেনি।

ওয়েব আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ৬ থেকে ৭ লাখ মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করেন। তারা বছরে প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠান। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা, এ অংক দেশের মোট রপ্তানি আয়ের অর্ধেকের বেশি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বর্তমানে ১৭৪টি দেশে বাংলাদেশ শ্রমিক পাঠিয়ে আসছে, অঙ্কে যার সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ২০ লাখের বেশি। যাদের তিন-চতুর্থাংশ কর্মরত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশি শ্রমিকেরা আছেন, এমন অনেক দেশ এখনো লকডাউন হয়নি। আবার লকডাউন হলেও পরিবার চালাতে ঋণ করে হলেও অনেকে টাকা পাঠাচ্ছেন। করোনার কারণে উন্নত দেশ থেকেও আয় আসা বেড়েছে। তবে এভাবে কতদিন আসবে তা অনিশ্চিত। এখনই প্রবাসীদের সহায়তায় সরকারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।

রেমিট্যান্সের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৬৭ কোটি (২০ বিলিয়ন) ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। (বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার ৭১২ কোটি টাকা)। এর আগে, কোনো অর্থবছরে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি বাংলাদেশে।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৪৮৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে ১০ মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৯ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলের প্রবাসীরা। অর্থবছর হিসেবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। তারও আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময় এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে।

এদিকে, রেমিট্যান্সের প্রবাহ চাঙ্গা থাকায় ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সবশেষ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৪৪.৮২ বিলিয়ন বা চার হাজার ৪৮২ কোটি ডলারে বেশি রয়েছে।

২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরো ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী। এছাড়া, ঈদ ও উৎসবে বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সকারের প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেয়ার অফার দিচ্ছে। এতে করে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা।

সর্বশেষ সংবাদ

আসিয়ান-এর সদস্যপদের জন্য ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন চান প্রধান উপদেষ্টা

আসিয়ানে বাংলাদেশের সদস্যপদ পেতে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিকে বাংলাদেশিদের...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ