চাঁদপুরে টানা এক বছর ধরে গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে আমজাদ মাহমুদ নিলয় (২১) নামের সেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (০৪ মে) ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানা এলাকা থেকে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়। আজ বুধবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় এর আগে ওই ছাত্রের মা শাহনাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করা হলেও পালিয়ে যায় বাবা আব্দুল মাজেদ ও অভিযুক্ত ছাত্র নিলয়।
পুলিশ জানায়, চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেস এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন আব্দুল মাজেদ ও শাহনাজ বেগম দম্পতি। আব্দুল মাজেদ চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এ কর্মরত। তাদের বাসায় দীর্ঘ ৪ বছর ধরে কাজ করে আসছিলেন ভিকটিম ওই তরুণী। কিন্তু তাকে কোনো টাকা পয়সা দেওয়া হতো না। উপরন্তু তাদের বড় ছেলে ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া নিলয় এক বছর ধরে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে আসছে।
পুলিশ আরও জানায়, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে চাঁদপুরের বাসাতেই অবস্থান করছিল অভিযুক্ত ওই যুবক। তার বাবা-মা যখন কর্মস্থলে চলে যায় তখন সে গৃহকর্মীকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে আসছিল। বিষয়টি নিলয়ের বাবা ও মাকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি অসহায় ওই গৃহকর্মী। উল্টো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমকে চুপ থাকতে বাধ্য করা হয়েছে।
সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল দুপুরে আব্দুল মাজেদ ও শাহনাজ বেগম দম্পতি অফিসে গেলে নিলয় আবারো তরুণীকে ধর্ষণ করে। ভিকটিম সর্বশেষ ঘটনার বিষয়টি আব্দুল মাজেদ ও শাহনাজ বেগম দম্পতিকে জানিয়ে প্রতিকার চান। কিন্তু তারা মা-ছেলে মিলে তাকে নির্যাতন করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ৩০ এপ্রিল বাসা থেকে পালিয়ে সড়কে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই তরুণী। কিন্তু আশপাশের মানুষ তা দেখে ফেলায় রক্ষা পান তিনি।
এমন ঘটনার পর বিষয়টি চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদের নজরে পড়ে। তিনি ঘটনার শিকার তারুণীকে উদ্ধার করে সদর মডেল থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ ঘটনায় গৃহকর্মী তরুণীর কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই পরিবারের তিন জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ।