একইসঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য আগাম জামিন শুনানি বন্ধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বর্তমান লকডাউন ও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোন ধরনের আগাম জামিনের শুনানি গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে ভার্চুয়ালি এই জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিলো। আবেদনটি কার্যতালিকার ১৪ নম্বরে রাখা ছিলো। নিয়ম অনুযায়ী আগাম জামিন করতে হলে আসামিকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে হয়।
এর আগে, বুধবার (২৮ এপ্রিল) হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করেন সায়েম সোবহান আনভীর।
গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর গুলশান ২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের ফ্ল্যাট থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ কর্তৃক ওই কলেজছাত্রীর মরদেহ উদ্ধারের পর তার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান থানায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সায়েম সোবহানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মুনিয়ার। প্রতি মাসে এক লাখ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে সায়েম সোবহান তাকে ওই ফ্ল্যাটে রেখেছিলো। নিয়মিত ওই বাসায় সায়েম যাতায়াত করতো। তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো করে থাকতো।
মুনিয়ার বোন অভিযোগ করেছেন, তার বোনকে বিয়ের কথা বলে ওই ফ্ল্যাটে রেখেছিলো। একটি ছবি ফেসবুকে দেওয়াকে কেন্দ্র করে সায়েম সোবহান তার বোনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। তাদের মনে হচ্ছে, মুনিয়া আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এর বিচার চান তারা।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) অভিযুক্ত সায়েম সোবহান আনভীরের বিদেশে যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। সেই সঙ্গে ৩০ মের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার আদেশ দেয়া হয়। তবে, এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে তার বিদেশ যাওয়ার খবর ছড়ায়। যদিও ইমিগ্রেশন পুলিশ জানায়, সম্প্রতি এই নামের কেউ বিদেশ যায়নি।
এরইমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে সিসিটিভির ফুটেজসহ বিভিন্ন আলামত। মুনিয়ার লেখা ছয়টি ডায়েরিও হাতে পেয়েছে পুলিশ। যাতে আনভীরের সঙ্গে সম্পর্ক, মনোমালিন্য, জীবন সম্পর্কে হতাশার কথা উল্লেখ রয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে আত্মহত্যার তথ্য রয়েছে; তবে আত্মহত্যায় প্ররোচনা রয়েছে কী না, তা যাচাই বাছাই করছে পুলিশ।