মানুষের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য সমৃদ্ধি সাধনে, তার বৃহত্তর কল্যাণ কর্মে নিরন্তর নিরলস সেবায় অতুলনীয় নজির স্থাপন করেছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের আবিষ্কারের ফলে এমন কিছু হয়েছে যা আমরা কল্পনা করতে পারি না। এবার সেই বিজ্ঞানের কল্যাণে প্রথমবারের মতো মঙ্গল গ্রহে হেলিকপ্টার ওড়াতে চায় নাসা! আর মঙ্গলে মানুষের হেলিকপ্টার ওড়ানোর সময়ের সাক্ষী হতে হয়তো মানুষকে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
তবে গেল সোমবারই মঙ্গলের আকাশে ওড়ার কথা ছিল এই হেলিকপ্টারের। তবে শেষ ধাপের পরীক্ষায় সব কিছু ঠিকঠাক চলেনি। তাই কয়েকদিনের জন্য পিছিয়ে গেছে ইতিহাস রচনার এই ক্ষণ।
হেলিকপ্টারটির নাম রাখা হয়েছে ‘ইনজেন্যুইটি’। বাংলাদেশ সময় বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাত বা বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে লাল গ্রহ মঙ্গলের আকাশে প্রথমবারের মতো ওড়ানো হতে পারে ইনজেন্যুইটি, এমনটাই জানিয়েছে নাসা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে মঙ্গলের বুকে এই ইনজেন্যুইটিকে সফলভাবে নামাতে সক্ষম হয় নাসা। এরপর চলে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা। পরীক্ষার শেষ ধাপটা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
হেলিকপ্টারের মাথার ওপরে থাকা ৪টি রোটর ব্লেড (পাখা) ঠিক ভাবে প্রয়োজনীয় গতিবেগে একে অন্যের বিপরীত দিকে ঘুরতে পারছে কি না, সেটাই দেখতে চেয়েছিল নাসা। তবে সেই পরীক্ষা মাঝপথেই বন্ধ করে দিতে হয়।
নাসার চালানো পরীক্ষায় দেখা যায় ইনজেন্যুইটির ব্লেডগুলো কাঙ্খিত গতিবেগে ঘুরছে না। আর এ জন্যই মঙ্গলের আকাশে প্রথম হেলিকপ্টার ওড়ানোর স্বপ্নটা আরও কিছুদিন পিছিয়ে গেছে।
ইনজেন্যুইটিকে হেলিকপ্টার বলা হলেও আসলে এটি ১.৮ কেজির একটি ক্ষুদ্র ড্রোন। নাসার বিজ্ঞানীদের ভাষ্য, ইনজেন্যুইটির সোলার প্যানেলগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম; যা হিমশীতল মঙ্গলের রাতে তাকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে।
মঙ্গলে রাতের বেলায় উষ্ণতা নেমে যায় প্রায় মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্বাভাবিকভাবেই নেভিগেশন সেন্সর, কম্পিউটার ও ক্যামেরা দু’টিকে বাঁচাতে দেহ উষ্ণ রাখতে হবে ইনজেন্যুইটিকে।
নাসার গবেষকদের তথ্যানুযায়ী, পৃথিবী থেকে মঙ্গলের বিশাল দূরত্বের কারণে পৃথিবী থেকে ইনজেন্যুইটিকে নিয়ন্ত্রণ করা এক প্রকার অসম্ভব। আর তাই কম্পিউটারে প্রোগ্রাম করা পথেই চলবে এই ড্রোন।