জেমস তখন কণ্ঠ আর গিটারের সুরের মূর্ছনায় মাতিয়ে যাচ্ছেন স্টেজ। পুরো মাঠ জুড়ে হৈহৈ কাণ্ড রই রই ব্যাপার! বহুদিন পর প্রিয় রক তারকার গান উপভোগ করছেন সবাই। হঠাৎ নিরাপত্তা বেষ্টনী টপকিয়ে একটি মেয়ে স্টেজে উঠে ছুঁয়ে ফেলেন প্রিয় গায়ককে। তার এমন কাণ্ড মাঠে উপস্থিত দর্শকদেরও দেয় বাড়তি বিনোদন। মনে মনে হয়তো সবাই ভাবছিলেন ঈশ, আমিও যদি এভাবে জেমস গুরুর পা ছুঁয়ে সালাম করতে পারতাম!
তবে গানে গানে নগরবাউল দারুণভাবেই ছুঁয়ে গেছেন সবাইকে। ভাসিয়েছেন বুনো উল্লাসে। করোনাকাল পেরিয়ে প্রায় এক বছর পর এদিন খোলা মাঠে কণ্ঠ ছাড়েন উপমহাদেশের জনপ্রিয় এই তারকা। রাজধানীর মিরপুর-১৪ নম্বরে অবস্থিত পিএসসি কনভেনশন হলে এই আয়োজন করে ২০০১ সালে এসএসসি পাশ করা শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ক্লাসরুম’। ২০০১ সালে এসএসসি পাশ করা ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের গণ্ডি পেরুনোর ২০ বছর পূর্তিতে ফুর্তি করেছেন জেমসের গানে, গিটারে।
রাত ঠিক পৌঁনে ৯টায় স্টেজে ওঠেন জেমস। শুরুতেই ভক্তদের নতুন লুকে চমকে দেন! গোঁফ রেখেছেন তিনি। তার এই লুক দেখে মাঠে ভক্তদের ফিসফিসাফিসফিস-‘গোঁফে তো গুরুকে সেই রকম লাগছে।’ এরইমধ্যেই ‘হ্যালো’ বলে আওয়াজ তুলে মাঠের ‘ক্লাসরুম’কে জাগিয়ে তোলেন জেমস।
শুরু করেন নিজের তুমুল জনপ্রিয় গান ‘লেইস ফিতা লেইস’ দিয়ে। গানটি শেষ হতেই ‘লাভিউ’ বলে গর্জন তোলেন। এরপর একে একে গাইতে থাকেন ‘সুন্দরীতমা’, ‘গুরু ঘর বানাইলা কি দিয়া’, ‘চালচালে’, ‘সুলতাবা বিবিয়ানা’ এবং ‘মা’।
এরপর যখন বলে ওঠেন, ‘মাঠে কি আজ দুষ্টু ছেলের দল আছে?’ তখন আর কারও বুঝতে বাকি রইল না এবার তিনি ‘দুষ্ট ছেলের দল’ গেয়ে ঝড় তুলবেন! গানটি শেষে, ‘শাবাশ বাংলাদেশ’ বলে চিৎকার দেন জেমস। এরপর দরাজ কণ্ঠে ধরেন ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’। জেমসের গাওয়া এক ডজন গানের শেষ চারটি ছিল ‘মিরা ভাই’, ‘বিজলী’ ‘পাগলা হাওয়া’ এবং ‘ভিগিভিগি’। পরিবেশনা শেষে জেমস যখন স্টেজ ছাড়ছিলেন মাঠ জুড়ে তখন একটাই আওয়াজ-‘গুরু, গুরু গুরু’।